২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতাকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণ সিং বাংলাদেশের পরিস্থিতি উল্লেখ করে ভারতে অবস্থানকারী শারণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি ও আওয়ামী লীগের সাথে একটি মীমাংসারয় আসার জন্য পাকিস্তানিদের প্রতি আহ্বান জানান।
২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
- মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল পাকসেনাদের একটি দলকে মাগুলা বাজার থেকে রসদ নিয়ে দেহার থানার কাম্পো যাবার পথে আক্রমণ করে। এই আক্রমণে ১৪ জন পকসেনা নিহত ও ৮ জন আহত হয়। গেরিলা যোদ্ধারা পাকসেনাদের সমস্ত রসদ দখল করে।
- ৪নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের একটি দলকে রসদ নিয়ে বড়াইল ক্যাম্পের দিকে দযাবার পথে অ্যামবুশ করে। এই অ্যামবুশে ২জন পাকসেনা নিহত হয়।
- মুক্তিবাহিনী মর্টারের সাহায্যে নওয়াবগঞ্জ থানায় পাকসেনাদের রামচন্দ্রপুর ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর ৭ জন সেনা নিহত হয়।
- ৬নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী কমান্ডার মোত্তালিব ও কমান্ডার এস.এম. ফারুকের নেতৃত্বে হিলিতে পাকসেনাদের সাথে প্রচণ্ড যুদ্ধে লিপ্ত হয়। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এই যুদ্ধে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। অপরদিকে মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধা কমান্ডার মোত্তালিব মর্টারের গুলিতে আহত হন।
- মুক্তিবাহিনী ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় পাকসেনাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ২ জন সৈন্য নিহত হয়।
- ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য তিন দিনের সরকারি সপরে মস্কো রওনা হন।
- পাকবাহিনী ৪টি লঞ্চে করে নবাবগঞ্জের দিকে অগ্রসর হলে ৫০ জন গেরিলার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী মুক্তিযোদ্ধা দল গলিমপুরের কাছে লঞ্চগুলোকে আক্রমণ করে। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনসহ ৩৫ জন সৈন্য নিহত এবং অনেক আহত হয়। বাকী পাকসেনারা ছাত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে।
- জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতাকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণ সিং বাংলাদেশের পরিস্থিতি উল্লেখ করে ভারতে অবস্থানকারী শারণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি ও আওয়ামী লীগের সাথে একটি মীমাংসারয় আসার জন্য পাকিস্তানিদের প্রতি আহ্বান জানান।
- মওলানা এম. এম. মান্নানের নেতৃত্বে মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির একটি প্রতিনিধি দল ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লে. জেনারেল নিয়াজীর সাথে দেখা করেন। সাক্ষাতে মওলানা মান্নান বলেন, পাকিস্তানি নিরাপত্তার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষকরা লে. জেনারেল নিয়াজীকে পূর্ন সহযোগিতা করবেন।
তিনি লে. জেনারেল নিয়াজীকে একখানা কোরআন শরিফ উপহার দিয়ে তাঁকে আশ্বাস দেন ওলেমা ও মাদ্রাসা শিক্ষকরা রাষ্ট্রবিরোধীদের উৎখাতের ব্যাপারে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে প্রস্তুত।