২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

Home

২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

Responsive image

২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব সুলতান মোহাম্মদ জাতিসংঘ মহাসচিব উ’থান্টের কাছে এক পত্রে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীন ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ করেন। পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘দুঃখের সঙ্গে স্বীকার করতে হয় যে, জাতিসংঘের কতিপয় সদস্য রাষ্ট্র জাতিসংঘ বিধির প্রতি সমর্থনের বুলি আওড়িয়ে প্রকৃতপক্ষে জাতিসংঘের মূলনীতিকে ধ্বংস করার কাছে লিপ্ত থেকে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিপন্ন করে তুলেছে।

২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

  • ১নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর ১৫ সদস্যের একটি গেরিলা দল গুতুমা নামক স্থানে পাকসেনাদের অ্যামবুশ করে। এই অ্যামবুশে ৩ জন পাকসেনা হতাহত হয়।

 

  • ১নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী রকেট লাঞ্চারের সাহায্যে পাকসেনাদের চম্পকনগর বিওপি অবস্থানের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর বহু বাঙ্কার বিধ্বস্ত হয় এবং ৫ জন সৈন্য হতাহত হয়।

 

  • ২নং সেক্টরে পাকবাহিনীর একটি লঞ্চে নওয়াবগঞ্জের দিকে অগ্রসর হলে গালিমপুরের কাছে একদল গেরিলা লঞ্চটির ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে। এই যুদ্ধ ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত চলে। শেষ পর্যন্ত পাকসেনারা মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধাদের কাছে পর্যুদস্ত হয়। এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর ক্যাপ্টেন জাফর আলী খান, সুবেদার আবদুল্লাসহ ৪৬ জন সৈন্য নিহত হয় এবং লঞ্চটি ডুবে যায়। অপরপক্ষে মুক্তিবাহিনীর বীর গেরিলা যোদ্ধা আবদুর রহিম এবং মুহম্মদ আলী শহীদ হন।

 

  • নাটরের টেবলাই নামক গ্রামে অবস্থানরত এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধার ওপর পাকসেনাদের তিনটি দর মিলিভাবে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্যে একযোগে আক্রমণ চালায়। কিছুক্ষণ যুদ্ধের পর মক্তিযোদ্ধারা কৌশল পরিবর্তন করে মেলা সাব-সেক্টরের সদর দপ্তর বাঁশতলা পর্যন্ত পিছিয়ে যায়। বাঁশতলা থেকে শক্তি সঞ্চয় করে মুক্তিযোদ্ধারা আবার পাল্টা আক্রমণ চালালে পাকসেনারা রণে ভঙ্গ দিয়ে পালিয়ে যায়। ৪ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে ৪ জন পাকনো নিহত ও অনেক আহত হয়। অপরদিকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

 

  • ফরিদপুর সাব-সেক্টর কমান্ডার নূর মোহাম্মদের যুদ্ধ রিপোর্ট : ফরিদপুরের ভাটিয়াপাড়ায় মুক্তিবাহিনী দুঃসাহসিক অভিযান চালিয়ে ১৭ জন পাকসৈন্যকে হত্যা এবং ৯ জনকে আহত করে। মুক্তিবাহিনী ভাটিয়াপাড়া ওয়ার্লেস স্টেশন ধ্বংস করে দেয়। অপরদিকে ভেদরগঞ্জে মুক্তবাহিনীর আরেকটি আক্রমণে ৮৫ জন পাকপুলিশ ও রাজাকার নিহত হয়।

 

  • ঢাকায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধা এনায়েত ও আবুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের রাস্তায় প্রাদেশিক সরকারের মৌলিক গণতন্ত্র ও স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসন মন্ত্রী মওলানা মোহাম্মদ ইসহাকের গাড়িতে গ্রেনেড আক্রমণ চালায়। এতে মওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও গাড়ির ড্রাইভার গুরুতর আহত হন।

 

  • করাচীতে একজন সরকারি মুখপাত্র ঘোষণা করেন : পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা সম্পর্কে ভারতীয় অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীর সামনে প্রকৃত অবস্থান তুলে ধরার জন্য পাকিস্তানের যেসব প্রতিনিধি বিদেশ সফর করছেন তাদের মধ্যে দৈনিক ‘ইত্তেফাক’Ñএর সাংবাদিক খন্দকার আবদুল হামিদ রয়েছেন।

 

  • ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেল হরবার্ট ড্যানিয়েল স্পিভাক জামায়াত নেতা আব্বাস আলী খানের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

 

  • পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব সুলতান মোহাম্মদ জাতিসংঘ মহাসচিব উ’থান্টের কাছে এক পত্রে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীন ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ করেন। পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘দুঃখের সঙ্গে স্বীকার করতে হয় যে, জাতিসংঘের কতিপয় সদস্য রাষ্ট্র জাতিসংঘ বিধির প্রতি সমর্থনের বুলি আওড়িয়ে প্রকৃতপক্ষে জাতিসংঘের মূলনীতিকে ধ্বংস করার কাছে লিপ্ত থেকে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিপন্ন করে তুলেছে।

© 2024 Liberation War Museum, All rights reserved

Powered by -

×